কিডনি সুস্থ রাখতে কার্যকরী যেসব খাবার।
আমাদের দেহের সুস্থতায় কিডনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।কিডনি আমাদের দেহের বর্জ্য পদার্থ এবং দেহের বাড়তি পানি নিষ্কাশনে সাহায্য করে আমাদের দেহকে রাখে ক্ষতিকর টক্সিন মুক্ত।তাই কিডনির সুস্থতা আমাদের নিজেদের সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরী।
কিডনির সমস্যায় ভুগে প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যান।আমরা নিজের অজান্তে আমাদের বাজে খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ক্ষতি করে যাচ্ছি আমাদের সুস্থতার কাজে নিয়োজিত এই অঙ্গটিকে।স্বাদের দিকে লক্ষ্য রাখতে গিয়ে আমরা খাচ্ছি আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর অনেক খাবার।যা অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের পাশাপাশি ক্ষতি করে চলেছে কিডনিরও।সুতরাং নিজের ভালোর জন্য আমাদের একটু সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।জানা প্রয়োজন কোন কোন খাদ্য কিডনিকে সুস্থ রাখার জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখা প্রয়োজন।
>>বাঁধাকপি<<
বাঁধাকপিতে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি৬, ফলিক অ্যাসিড এবং ফাইবার যা কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে।এতে পটাশিয়ামের মাত্রা অনেক কম থাকে বলে কিডনির যে কোন রোগ প্রতিরোধের কাজে সহায়তা করে।এছাড়া কিডনি সহ দেহের অন্যান্য অংশের ক্যান্সার সেল দমনে বাঁধাকপি বেশ কার্যকরী।
>>ফুলকপি<<
ভিটামিন সি, ফোলাইট, ফাইবার, ইনডোলস, গ্লুকোসিনোলেটস এবং থায়োসায়ানেটস উপাদান ভরপুর ফুলকপি দূর করে কিডনি এবং দেহের নানান ধরনের ক্ষতিকর টক্সিন যা সেল মেমব্রেন্স এবং ডিএনএ ড্যামেজ করতে সক্ষম।তাই খাদ্য তালিকায় ফুলকপি রাখার চেষ্টা করুন।এটি কিডনি ড্যামেজের আশঙ্কা কমিয়ে দেয়।
>>রসুন<<
গন্ধের জন্য রসুন অনেকেই পছন্দ করেন না।রান্নায় ব্যবহার হলেও অনেকে তা খান না।কিন্তু দিনে ২/৩ কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাস করলে কিডনি থাকবে পরিষ্কার এবং কিডনির সমস্যা জনিত রোগের সম্ভাবনা কমে যায় প্রায় ৩০%।কাঁচা রসুন না খেতে চাইলে রান্নায় ব্যবহৃত রসুন ফেলে না দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
>>পেঁয়াজ<<
বিভিন্ন ফ্লেভানয়েড, কুয়েরসেটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সমৃদ্ধ পেঁয়াজ কিডনির পাথর এবং ব্লাডারের ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।রান্নায় ব্যবহারের পাশাপাশি কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার অভ্যাস কিডনির যে কোন সমস্যা থেকে দেহে মুক্ত রাখবে।
>>আপেল<<
হাই ফাইবার, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে ভরপুর আপেল আমাদের দেহের নানা সমস্যা সমাধানে কাজ করে, যেমন, কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রন, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর, হৃদপিণ্ডের সুস্থতা এবং ক্যান্সার সেল গঠন প্রতিরোধ।এছাড়াও আপেল কিডনির জন্য সব চাইতে ভালো একটি ফল হিসেবে পরিচিত।বলা হয়, দিনে ১ টি আপেল আপনাকে রাখবে নীরোগ এবং সুস্থ।সুতরাং আপেল খান।
>>স্ট্রবেরি<<
স্ট্রবেরিকে মোটামোটি সর্বগুণ সম্পন্ন ফল বলা যায়।দেহের বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে স্ট্রবেরির অনেক ব্যবহার রয়েছে।কিন্তু দেহের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সুরক্ষায় স্ট্রবেরি অনেক বেশি কার্যকরী।এটি আমাদের দেহের ভেতরের সেল গঠনে বড় ভূমিকা রাখে।এবং কিডনির অক্সিডেটিভ ড্যামেজ প্রতিরোধ করে।বর্তমানে স্ট্রবেরি বেশ সুলভ আমাদের দেশের বাজারে।তাই প্রতিদিন স্ট্রবেরি খাবার চেষ্টা করুন।
>>ডিমের সাদা অংশ<<
ডিমকে সবাই একটি সুপারফুড হিসেবেই জানি।দেহে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে ডিমের ভূমিকা অনেক বেশি।এছাড়াও এতে রয়েছে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড যা কিডনিতে পাথর জমতে বাধা প্রদান করে এবং কিডনি পরিস্কারে সহায়তা করে।তবে কিডনির উপকারের জন্য কুসুম এড়িয়ে চলাই ভালো।
>>মাছ<<
মাছ সব চাইতে ভালো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ।এই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড সমূহ দেহে ক্যান্সারের সেল গঠন প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।প্রতিদিন একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ ৪০ গ্রাম মাছ খেলে কিডনির সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে পারেন দেহকে।যদি প্রতিদিন খেতে না পারেন তবে সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন খাবার তালিকায় মাছ রাখার চেষ্টা করুন।
Comments
Post a Comment