বেসিক ইলেকট্রনিক্স - সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর ( পর্ব -০১ )
ইলেক্ট্রনিক্সঃ
ইন্জিনিয়ারিং এর যে শাখায় ভ্যাকুয়াম টিউব, গ্যাস টিউব, সেমিকন্ডাক্টর ইত্যাদি এর মধ্যদিয়ে ইলেক্ট্রন প্রবাহ নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ইলেক্ট্রনিক্স বলে। ইলেক্ট্রনিক্সের কম্পোনেন্ট দুই ধরনের। যথা-
১) Active component
2) Passive component
Active component-
যে সকল কম্পোনেন্ট চালানোর জন্য আলাদা পাওয়ার সোর্সের প্রয়োজন হয় তাকে Active component বলে। যেমন- Transistor, FET, TRIACs, SCRs, LEDs etc.
Passive component-
যে সকল কম্পোনেন্ট চালানোর জন্য আলাদা পাওয়ার সোর্সের প্রয়োজন হয় না তাকে passive component বলে। যেমন-
* Resistors
* Capacitors
* Inductors
* Diodes
* Transistors
নিচে এগুলার সংজ্ঞা দেওয়া হল:
Resistors: রেজিস্টর মূলত দুই প্রান্ত বিশিষ্ট একটি Passive Component যা কোন পরিবাহির মধ্য দিয়ে ভোল্টেজ বা অন্য কোন Active Components-কে প্রভাবিত করার জন্য তড়িৎ প্রবাহকে বাঁধা দিয়ে থাকে।
Capacitors: ক্যাপাসিটিরও একটি Passive Component. এটি মুলত চার্জকে ধরে রাখে। উদাহরনস্বরুপ রিচার্জেবল ব্যাটারি যেমন চার্জ ধরে রাখতে পারে, ক্যাপাসিটরও তেমনি চার্জ ধরে রাখতে পারে, তবে তা খুব স্বল্প পরিসরে।
Inductors: ইন্ডাকটর একটি passive electrical component যা চৌম্বকক্ষেত্রে (magnet field) শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে। মূলত ইন্ডাকটরে একটি কোরের চারপাশে পরিবাহী তারকে জড়ানো হয়। যদি কোন পরিবাহী পদার্থের চারপাশে পরিবাহী তার জড়ানো হয় তাহলে সেই পদার্থের ইন্ডাকট্যান্স অনেকগুণ বেড়ে যায়। ইন্ডাকটর সাধারণত ফ্রিকোয়েন্সি ফিল্টার, চোকস, ট্রান্সফর্মার, মোটর ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
Transistor: হলো- তিন টার্মিনাল, তিন লেয়ার, এবং দুই জাংশন বিশিষ্ট সেমিকন্ডাক্টর ডিভইস, যা ইনপুট সিগন্যাল এর শক্তি বৃদ্ধি করে আবার সুইচিং ডিভাইস হিসেবেও কাজ করে।
এর তিনটি টার্মিনাল হলো- বেস, ইমিটার এবং কালেক্টর। বেস টার্মিনাল ইনপুট হিসেবে এবং কালেক্টর ও ইমিটার আউটপুট হিসেবে ব্যাবহার করা হয়।
Transistor প্রধানত দুই প্রকার। যথা-
1) BJT (Bipolar Junction Transistor)
2) FET (Field Effect Transistor)
BJT কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
1) PNP (Positive-Negative-Positive) Transistor.
2) NPN (Negative-Positive-Negative) Transistor.
FET কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
1) JFET (Junction Field Effect Transistor).
2) MOSFET (Metal Oxide Field Effect Transistor).
JFET আবার দু প্রকার। যথা-
1) P-Channel.
2) N-Channel.
MOSFET আবার দুপ্রকার।যথা-
1) Depletion Mode.
2) E-Only (Enhancement Only) Mode.
Depletion Mode আবার দু প্রকার। যথা-
1) P-Channel.
2) N-Channel.
Enhancement Only Mode আবার দু প্রকার। যথা-
1) P-Channel.
2) N-Channel.
Diode:
Diode হলো- দুই টার্মিনাল বিশিষ্ট একটি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, যাতে একটি PN Junction থাকে এবং যা একমুখী কারেন্ট প্রবাহ সৃষ্টি করতে পারে। এক কথায়- একটি PN Junction কেই Semiconductor Diode/ Crystal Diode বলে।
ডায়োডের দুটি টার্মিনাল –
1) Anode.
2) cathode.
সবচেয়ে বেশী ব্যাবহৃত ডায়োডগুলো হলো-
1) জেনার ডায়োড (zenar Diode)
2) ভ্যারিষ্টার ডায়োড ( Barrister Diode)ilek
3) টানেল ডায়োড ( Tunnel Diode)
4) সেভেন সেগমেন্ট ডায়োড ( Seven Segment Diode/ LED Display)
5) লাইট ইমিটিং ডায়োড (Light Emitting Diode/ LED)
6) ফটো ডায়োড ( Photo Diode) (আলোর প্রতিফলনে কাজ করে)
7) ভ্যারাক্টর ডায়োড ( Varactor Diode)
8) স্কটকি ডায়োড ( schottky Diode)
বেসিক ইলেকট্রনিক্স উপাদান :
* ডায়োড (Diode)
* ট্রানজিস্ট্রার (Transistor)
* ভেরোবোর্ড বা বেডবোর্ড
* রেজিষ্টার (Resistor)
* কিছু কানেক্টর
* ক্যাপাসিটর (Capacitor)
* Non polar Capacitor
* Polar Capacitor
* কিছু এলইডি
* মাল্টিমিটার ইত্যাদি।
সুইচ (Switch): সুইচ একটি ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস বা কম্পোনেন্ট। ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের কারেন্ট বা ইলেকট্রনের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করতে সুইচ ব্যবহার করা হয়। সুইচকে ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটের নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইসও বলা হয়।
চেঞ্জওভার সুইচ (Changeover Switch): চেঞ্জওভার সুইচ এক প্রকার ইলেকট্রিক্যাল সুইচ যা কারেন্টের প্রবাহকে এক টার্মিনাল থেকে অন্য টার্মিনালে পরিবর্তন বা পরিচালনা করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
পুশ বাটন (Push Button): পুশ বাটন এক প্রকার সুইচ। এই সুইচে একটি বাটন বা বোতাম থাকে যা টিপে সার্কিটকে চালু বা বন্ধ করতে হয়। অনেক ধরনের পুশ বাটন রয়েছে যেমনঃ কিছু পুশ বাটন রয়েছে যা একবার টিপ দিলে অন হয় আবার আরেকবার টিপ দিলে অফ হয় এবং বাটনটি নিজ নিজ অবস্থানে থাকে। আবার আরেক ধরনের পুশ বাটন আছে অন বা অফ করার পরও বাটন পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের পুশ বাটন সুইচ তৈরি করা হয়।
ফিউস (Fuse) কাকে বলে…?
ফিউজ মূলত একটি ইলেকট্রিক্যাল সেফটি ডিভাইস যা ওভার কারেন্টের ক্ষতি থেকে সার্কিটকে রক্ষা করে থাকে। সাধারণত এতে পাতলা ধাতব ব্যবহার করা হয়। যদি সার্কিটে কোন কারণে অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হয়, তাহলে অতিরিক্ত কারেন্ট দ্বারা উৎপাদিত তাপের কারণে ধাতবটি গলে যেয়ে কারেন্ট প্রবাহ বন্ধ করে দিয়ে ইলেকট্রিক্যাল কানেকশনকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
গ্রাউন্ডিং (Grounding) কাকে বলে…?
অনাকাঙ্খিত বিদ্যুৎ থেকে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি – সরঞ্জাম ও মানুষকে রক্ষা করার জন্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির বহিরাবরণ বা মেটাল অংশ থেকে বিদ্যুৎকে কোন পরিবাহীর মাধ্যমে মাটিতে প্রেরণ করার ব্যবস্থাকে গ্রাউন্ডিং বা আর্থিং বলে। লাইনে কোন কারণে লিকেজ কারেন্ট হলে আর্থিং সেই লিকেজ কারেন্টকে কোন প্রকার বিপদ না ঘটিয়ে পরিবাহীর মাধ্যমে সহজে মাটিতে চলে যেতে সাহায্য করে।
অ্যামপ্লিফায়ার (Amplifier) কাকে বলে?
অ্যামপ্লিফায়ার এক ধরনের ইলেকট্রনিক সার্কিট বা ডিভাইস। এটি কোন ইলেকট্রনিক সিগন্যালের ওয়েভশেপ ও ফ্রিকুয়েন্সিকে অপরিবর্তিত রেখে আউটপুটের শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। অর্থাৎ এর ইনপুট সাইড দিয়ে কম শক্তিশালী কোন সিগন্যাল প্রবেশ করালে তা আউটপুট সাইড দিয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী সিগন্যাল হয়ে বের হয়।
IC (Integrated Circuit) কাকে বলে?
আইসি মূলত সেমিকন্ডাক্টর উপাদান দ্বারা গঠিত ছোট একটি চিপ, যার উপর একাধিক মাইক্রো ইলেকট্রিক্যাল কম্পোনেন্ট বসিয়ে নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে এবং আকার কমাতে বানানো হয়।
বিভিন্ন প্রকার মিটার নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো :
অ্যামিটার (Ammeter): অ্যামিটার বা অ্যাম্পিয়ার মিটার একটি পরিমাপক যন্ত্র। এটি কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রের বিদ্যুৎ প্রবাহ পরিমাপ করতে ব্যবহার করা হয়। অ্যামিটারকে সিরিজে সংযোগ করে বিদ্যুৎ প্রবাহ পরিমাপ করতে হয়।
ভোল্টমিটার (Voltmeter): ভোল্টমিটার বা ভোল্টেজ মিটারও একটি পরিমাপক যন্ত্র। কোনো সার্কিটের দুই প্রান্তের মধ্যে ভোল্টেজ পরিমাপের জন্য ভোল্টমিটার ব্যবহার করা হয়। এটি সর্বদা পরিমাপের পয়েন্টগুলোর সাথে সমান্তরালে সংযুক্ত থাকে। ভোল্টমিটার সংযোগ দেখতে সিরিজ সংযোগের মতো হলেও কোনো যন্ত্রের ভোল্টেজ নির্ণয় করতে এর দুই প্রান্তের সঙ্গে সমান্তরালে সংযোগ করে বিদ্যুৎ পরিমাপ করতে হয়।
ওহম মিটার (Ohm meter): ওহম মিটার বা রেজিস্ট্যান্স মিটার হ’ল একটি পরিমাপক যন্ত্র। কোনও কম্পোনেন্টের রেজিস্ট্যান্স মাপার জন্য এই মিটার ব্যবহার করা হয়। ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতির কানেকশন চেক করার জন্যও ওহম মিটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ফ্রিকোয়েন্সি মিটার (Frequency Meter): একটি পাওয়ার লাইনের অল্টারনেটিং কারেন্টের মতো বিভিন্ন পর্যায়ক্রমিক সিগন্যালের ফ্রিকোয়েন্সি পরিমাপ করার জন্য ফ্রিকোয়েন্সি মিটার ব্যবহার করা হয়। রেঞ্জের (range) উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের ফ্রিকোয়েন্সি মিটার রয়েছে।
ওয়াট মিটার (Watt Meter): পাওয়ার লাইনে সাপ্লাইকৃত পাওয়ার পরিমাপ করার জন্য ওয়াট মিটার ব্যবহার করা হয়। এ জন্য ইলেকট্রিক পাওয়ারের একককে ওয়াট দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
কারেন্ট কত প্রকার ও কি কি
কারেন্ট দুই প্রকার যথা:
1. ডিরেক্ট কারেন্ট (Direct Current)
2. অল্টারনেটিং কারেন্ট (Alternating Current)
ডিরেক্ট কারেন্ট (Direct Current): যে কারেন্ট শুধুমাত্র একটি দিক বা ডিরেকশনে প্রবাহিত হয় তাকে ডিরেক্ট কারেন্ট বা ডিসি বলে। একটি ব্যাটারি বা সোলার সেল ডিরেক্ট কারেন্টের প্রধান উৎস।
অল্টারনেটিং কারেন্ট (Alternating Current): সময়ের সাথে যে কারেন্টের দিক বা ডিরেকশন পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয় তাকে অল্টারনেটিং কারেন্ট বা এসি বলে।
রিলে (Relay)
রিলে একটি প্রোটেকটিভ বা প্রতিরক্ষামূলক ডিভাইস যা বৈদ্যুতিক পাওয়ার সিস্টেমে কোন পূর্ব নির্ধারিত বৈদ্যুতিক অবস্থার পরিবর্তনে সাড়া দিয়ে সার্কিটে সংযুক্ত প্রোটেকটিভ ডিভাইস (সার্কিট ব্রেকার ও ট্রিপ কয়েল) গুলোকে অপারেট করতে সাহায্য করে থাকে। লো পাওয়ার সিগন্যাল ব্যবহার করে তুলনামূলকভাবে উচ্চ পাওয়ারের সার্কিটগুলোকে সুইচিং করার জন্য রিলে ব্যবহার হয়।
ইলেকট্রিক মোটর (Electric Motor)
মোটর একটি বৈদ্যুতিক মেশিন যা বৈদ্যুতিক শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর করে।
জেনারেটর (Generator)
জেনারেটর একটি বৈদ্যুতিক মেশিন যা যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। এই প্রতীকটি জেনেরিক জেনারেটরের প্রতিনিধিত্ব করে। বিভিন্ন চিহ্ন সহ বিভিন্ন ধরণের জেনারেটর রয়েছে।
ট্রান্সফর্মার (Transformer)
ট্রান্সফরমার একটি স্থির ইলেকট্রিক্যাল মেশিন। ইলেকট্রিক্যাল এনার্জিকে এর সাহায্যে পাওয়ার ও ফ্রিকুয়েন্সী পরিবর্তন না করে কোন প্রকার বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়া শুধু মাত্র চুম্বকীয়ভাবে সংযুক্ত দুইটি কয়েলে প্রয়োজন অনুযায়ী ভোল্টেজ কমিয়ে বা বাড়িয়ে এক সার্কিট হতে অন্য সার্কিটে পাওয়ার স্থানান্তরিত করা যায়
Comments
Post a Comment