একটি অন্যরকম ভালোবাসা। পার্ট:-1
# পার্ট - ১
তিতলীর সাথে আমার সম্পর্কের গল্পটা মাত্র সাড়ে নয় মাসের
গল্প ??? হ্যাঁ গল্পই বলা যায় , তবে ছোটগল্পছোটগল্পের মতো করে তিতলী এসেছিলো আমার জীবনে , আবার সেভাবেই চলে গেলো হঠাত !!!
শুরু থেকেই শুরু করি ,
ভার্সিটিতে ওঠার প্রায় এক বছর পার হয়ে যাবার পরেও একটা টিউশন বা পার্ট টাইম জব যোগাড় করতে পারছিলাম না কম চেস্টা করি নি , কিন্তু আর সবার মতই কপাল খারাপ শেষমেশ জাহিদ ই একটা টিউশন যোগাড় করে দিলো নিকুঞ্জ তে ক্লাস ওয়ানের একটা বাচ্চা মেয়েকে পড়াতে হবে , তাও আবার ইংলিশ মিডিয়াম এর এর আগে যা একটু অভিজ্ঞতা ছিলো সেটা ছিলো বাংলা মিডিয়াম যাই হোক সাহস করেই টিউশন টা নিয়ে নিলাম উত্তরা থেকে নিকুঞ্জ গিয়ে পড়াতে হবে সপ্তাহে ৪ দিন, তাও দুই ঘন্টা করে সাত হাজার টাকা দিবে শুনে আর না করতে পারি নি রাজি হয়েই গেলাম অবশেষে
যাইহোক , প্রথম দিন গিয়ে দেখা পেলাম আমার ছাত্রীর ফোকলা দাঁতের একটা মেয়ে , চকলেট খেতে খেতে দাঁতের প্রায় ১৩ টা বাজায় ফেলসে ! নাম জিজ্ঞেস করলাম ( সাত হাজার টাকার ঠেলায় ,ফোনে নাম টা জিজ্ঞেস করতেই ভুলে গিয়েছিলাম ওর আম্মু কে , এটা ভেবেই লজ্জা লাগছিলো আমি এমন ক্যান , ধুর )
ফোকলা দাত নিয়েই জবাব দিলো "তিতলি , আমার নাম তিতলি " তোমার নাম কি ?
টাশকি খেয়ে জবাব দিলাম "শিহাব"
ও বললো "পুরো নাম বলো"
আমি আবার ও টাশকিত !!! (ক্যামনে কি , এই মেয়েরে আমি পড়ামু , নাকি ও আমারে)
বললাম "শিহাব ইবনে হাসান"
সাথে সাথে ঝটপট উত্তর অন্য দিক থেকে ,আমার পুরো নাম হলো গিয়ে "ফাইরুজ তারান্নুম তিতলী" সবাই তিতলী ডাকে , শুধু আব্বু ডাকে "তিতা" ,জানো আব্বু টা অনেক পচা ,কি করে একটা বড় মেয়েকে (সিরিয়াসলি ??? কিছু বলার নাই) ডাকা লাগে সেটাও জানে না ...............
আরো কি কি জানি বলছিলো এক নাগাড়ে ইংলিশ-বাংলা মিক্স করে আর আমি দাঁড়ায় দাঁড়ায় অবাক হচ্ছিলাম এই পিচ্চি বান্দর টারে পড়াবো কি করে আমি !!! এর মাঝেই আমাকে অবাক করে দিয়ে বলে বসলো তিতলী "আচ্ছা তোমাকে কি বলে ডাকবো ? মা বলসে তোমাকে সার বলতে আর বাবা বলসে ভাইয়া বলতে, আর আমাকে কিন্তু একদম তিতা বলা যাবে না , তিতা বললে আমি অনেক রেগে যাই বাবা যখন বলে তখন আমি রাগ করে কিটক্যাট খাই
আর কথা বাড়াতে না দিয়ে বলে উঠলাম" না না থাক বাবু , আমি তোমাকে তিতলী বলেই ডাকবো আর তুমি আমাকে ভাইয়া বলে ডাকতে পারো(আমি নিজেই আমার টিচারদের সাথে হোয়াটসএপ ,ভাইভার আর এফবি তে দিনরাত গ্যাঁজাই , সেই সাথে ক্লাসে পেছনে বসে ঘুমাই লেকচার না শুনে পুরোপুরি ভাই-ব্রাদার সম্পর্ক তাদের সাথে আমার , সেই জায়গায় কি করে এই পিচ্চি মেয়েটাকে বলি আমাকে সার ডাকতে )
তিতলী বলে উঠলো " আমি কিন্তু বাবু না , আমি অনেক বড় (দু হাত ছড়িয়ে মেপেও দেখালো কতো বড়) আর আমি তোমাকে "সার-ভাইয়া" বলে ডাকবো কিন্তু (কি ক্রিয়েটিভ নাম রে ভাই ,এই মেয়েরে তো আমাদের ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি করানো দরকার)
কি আর করা , হ্যাঁ সুচক মাথা নেড়ে তিতলীর বকবক শুনতে শুনতে ওকে পড়াতে শুরু করলাম
Comments
Post a Comment