যে গল্প জানা ও অজানার পর্ব - ২
......চুরির ঘটনা অবশ্য সত্যিই ঘটছে।বুয়া এখানে আসার আগেও স্বামীর সাথে ঝগড়া হয়েছে।দুজনেই চেষ্টা করেছে একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপানোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নেহাত কম নয়।রান্না করতে দাড়িয়ে বুয়ার চোখে দমকে দমকে পানির চাপ সৃষ্টি হয়।দু-এক ফোটা সফলতা পেয়ে চোখের বাইরে অবস্থান নিতে সক্ষম হলে ট্যাপের পানি দিয়ে লবণের তিক্ততাকে পরাজিত করে দেয়।
চুরিটা করেছে তিন জনের একটা দল।তিনজনের মধ্যে কাউসার দলনেতা গোছের।সে বিয়ে করেছে বছর ঘুরে গেছে।তবে স্ত্রীকে ঢাকায় নিয়ে এসেছে মাস দুয়েক হয়।রিতা কাউসারের চুরির ব্যাপারে জানতোনা।ঢাকায় এসে জানতে পেরে কয়েকদিন কান্নাকাটি করেছে খুব।ডাল বাঘার দেয়ার কাটার পিটুনি খেয়ে চুপ মেরে গেছে।
বিয়ের আগে রিতার কাদেরের সাথে সম্পর্ক ছিলো।তিন বছরের প্রেম।জানা জানি হলে মেয়েকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টায় নেমে পড়েছিলো রিতার বাবা।ফলে কাউসারের বিয়ের প্রস্তাব আসলে মত দিতে দেরি করেনি।বাড়িঘরের হটাৎ ভাল উন্নতি করেছেলো কাউসার।লোহার ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে এইসব করেছে বলে গ্রামে প্রচলিত।রিতাও প্রতিরোধের সাহস পায়নি।ফলে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।
জীবন সম্পর্কে জ্ঞানহীন পাতলা হৃদয় একটু খোচাতেই ছিদ্র হয়ে যায়।রিতার বিয়েতে তড়িৎ এত বড় ফুটোর কুল কিনারা করতে না পেরে কাদের বাড়ির পেছনের কাঠাল গাছে ঝুলে পড়ে।
কাদের ফুটবলটা খুব ভাল খেলতো।এলাকার বড় দলের গোল কিপার হিসেবে খেলার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলো।গ্রামের অনেকেরই তার প্রতি একধরনের দুর্বলতা কাজ করতো।ফলে তার ঝুলে যাওয়া এলাকার অনেককেই স্তব্ধ করে দেয়।বিশেষ করে দীর্ঘদিন চাকরির পর রিটায়ার করা সখের ফুটবল কোচ বনে যাওয়া সজীব চৌধুরির
কাদেরর আত্নহত্যায় পুলিশি ঝামেলা মেটাতে রিতার বাবাকেও ২০ হাজার টাকা কন্ট্রিবিউট করতে হয়।পঞ্চম শ্রেনী পাশকরা কাদের আকাবাকা হাতের লিখার একটা চিঠি রেখে গিয়েছিলো বলে।বিয়েতে খরচের পর হাত ছিলো একেবারে খালি।২০ হাজার টাকা যোগাতে রিতার বাবার ১৫ বৎসর বয়সী মেহগনী গাছ দুটো কেটে ফেলতে হয়।সজীব চৌধুরি সাহায্য না করলে টাকা আরোও লাগত।সরকারী চাকুরিজীবি ছিল বলে পুলিশ তাকে সম্মানের চোখে দেখেছে বলে কম টাকাতেই মিটিয়ে দিয়েছে।
বিয়ের দিন গাঞ্জা মতি গাজার আশর থেকে ফেরার পথে রাত সাড়ে দশটায় কাদেরকে ঝুলন্ত অবস্থায় আবিস্কার করে।এগারোটার মধ্যে রিতার বাসর ঘরে কাদেরের আন্তহত্যার সংগীত পৌছে গেলে রিতা অজ্ঞান হয়ে যায়।
রাত দুইটায় কাউসার বলপূর্বক শারিরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টায় গেলে রিতা দ্বিতীয় বাড়ের জন্যে অজ্ঞান হয়।
পরদিন কাউসার গ্রামের বন্ধুদের কাছে প্রথম অজ্ঞানের ঘটনা লোকালেও,দ্বিতীয় অজ্ঞানের ঘটনা গল্পাকারে বলে ফেলে।
কিভাবে যেন দুই অজ্ঞানের ঘটনাই এলাকার যুবকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।দশ বছর পরের যুবকদের কাছেও ঘটনাটার আবেদন রয়ে যায়।তারা নির্মমতার উদাহরনের লেপনে গল্পটায় মাতে।ভেতরে থাকে ভয়ারিজমের পুলকতা।
Comments
Post a Comment