এক তারিখ থেকে ফেসবুক ব্যাবহার করা মানেই আপনি ফেসবুকের নতুন শর্ত গুলো মেনে নিয়েছেন।এমন একটি নোটিফিকেশন সকল ফেসবুক ব্যবহারকারীই পেয়েছেন।কিন্তু ঠিক মত মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন তো? আসুন দেখি ফেসবুকের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি শর্ত যা আপনারা মেনে নিতে যাচ্ছেন।১ তারিখ থেকে ফেসবুক ব্যবহার করলেই
কোথায় আছে এই শর্তাবলী এবং কি আছে এতে?
ওই নোটিশে নতুন শর্তগুলোর লিংক দেওয়া আছে।ফেসবুক ব্যবহার করতে হলে সকল শর্তই মানতেই হবে।ফেসবুকের নতুন শর্তগুলো লিপিবদ্ধ হয়েছে ১৫০ পৃষ্ঠায়।এর আগে ফেসবুকে নতুন ফিচার এবং কন্ট্রোল সিস্টেম আনা হয়েছিল।হালনাগাদের ফলে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা আরও ভালো হবে এবং ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে।এমনই বলছে ফেসবুক।নতুন শর্তাবলীর 'প্রাইভেসি বেসিকস' পাতায় কীভাবে ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজের তথ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সে বিষয়ে বলা হয়েছে।আর আছে দুটো বিপজ্জনক শর্ত।
বিপজ্জনক শর্ত -১ - ফেসবুক আপনার লোকেশন জানবে সবসময়।
নতুন শর্ত অনুযায়ী ফেসবুক ব্যবহারকারীর অবস্থান চিহ্নিত করতে পারবে।নতুন নীতিমালার 'লোকেশন ডাটা পলিসি'তে বলা হয়েছে ওয়াইফাই, জিপিএস এবং ব্লু টুথ ডাটা ব্যবহার করার সময় ফেসবুক ব্যবহারকারীর অবস্থান চিহ্নিত করতে পারবে।
কি হবে আপনার অবস্থান চিহ্নিত করলে? ফেসবুক বলছে ব্যবহারকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করে স্থানীয় বিজ্ঞাপনগুলো ফেসবুক ওয়ালে প্রদর্শন করা হবে।এতে করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দাতার সংখ্যা বাড়বে।
ফেসবুকের বিজ্ঞাপন দাতার সংখ্যা বাড়ুক, তাতে বিপজ্জনক কিছু নেই।কিন্তু, আপনার অবস্থানের তথ্যের নিরাপত্তা কি ফেসবুক ১০০ ভাগ নিশ্চিত করতে পারবে? এরই মধ্যে কয়েকদফা হ্যাক হয়েছে ফেসবুকের ব্যাবহারকারীর তথ্য।আপনার তথ্য ঠিক কি কাজে লাগতে পারে তা হয়তো আপনি নিজেও জানেন না।ফেসবুক যদি আপনার অবস্থানের তথ্যের গোপনীয়তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত করতে পারে তাহলে ভাল।তাই সাবধান, অনিশ্চিত বিপদে পড়ার হাত থেকে বাঁচতে ফেসবুক ব্যবহারে সচেতন হউন।
এছড়াও আরও একটি ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল, ফেসবুক ভিডিও বিজ্ঞাপন চালু করতে যাচ্ছে, যা স্বয়ংক্রিয় ভাবেই আপনার ওয়াল-এ আপনার অবস্থান অনুযায়ী প্রদর্শন করবে ফেসবুক।খুবই ভালো কথা, যদি আপনি ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করেন, অন্যথায় আপনার ব্যান্ডউইডথের বারোটা বাজাবে এই বিজ্ঞাপন গুলো।
বিপজ্জনক শর্ত -২ - আপনি কোন কোন সাইটে ভিজিট করছেন সেই তথ্য সংরক্ষণ করবে ফেসবুক।
লগইন অবস্থায় ফেসবুকের ব্যবহারকারীরা যেসব সাইট ভিজিট করবে তার সব তথ্য ফেসবুকের কাছে জমা থাকবে।এটা কি হল?কেন করবে ফেসবুক এই কাজ? নিশ্চয়ই কোন মহৎ উদ্দেশ্য আছে, তাই নয় কি প্রিয় পাঠক? আপনাদের মতামত কমেন্ট করবেন দয়া করে।
আপনি আপনার ঘরে কি করেন, কি ভাবে শুয়ে থাকেন, কি ভাবে বসেন, কখন কি খান সবকিছুই কোন একজনের কাছে সম্পুর্ন উম্নুক্ত।এই বাপারটাকি আপনি মেনে পারবেন? প্রিয় পাঠক, ওয়েব মানুষের জন্য আরেকটা দুনিয়া, এই দুনিয়াটা আপনার ব্যাক্তিগত, আপনি কি করছেন, কাকে মেইল করছেন, কোন কোন সাইট ভিজিত করছেন এই তথ্য গোপন করতে আপনারা সচারাচর ব্রাউজারের হিস্টরি মুছে দিয়ে থাকেন।তাই না? তাহলে অন্য কোন একটা প্রোগ্রাম যদি সেই সব তথ্য জা আপনি গোপন করতে চান তা জেনে যায় তাহলে তাকে কি মেনে নেবেন?
যাই হোক, ফেসবুক বলছে 'যেসব সাইট ভিজিট করবে তার সব তথ্য ফেসবুকের কাছে জমা থাকবে', কিন্তু কিছুটা অংশ কি আছে যা ফেসবুক বলছে না? সব তথ্য বলতে কি বুঝাচ্ছে ফেসবুক? এর আওতায় কি আপনি জিমেইল এ লগইন করে কাকে কি মেইল করলেন, কিংবা লগইন করার সময় আপনি কি ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিচ্ছেন তাও কি আছে? ফেসবুক আপনার অলক্ষ্যে ঠিক কি কি তথ্য সংরক্ষণ করবে তা নিশ্চিত নয়।তাই সাবধান।আপনার নিরাপত্তা আপনার কাছে
আরও মজার ব্যাপার হল এটা বন্ধ করার কোনও উপায় নেই।
বিকল্প উপায়ঃ
১। যদি আপনি নিজের অবস্থান প্রকাশ করতে না চান তাহলে আপনাকে ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে.অথবা স্মার্টফোন থেকে ফেসবুক অ্যাপস আনইন্সটল করে ফেলতে হবে এবং শুধু ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ থেকে ফেসবুক ব্যবহার করতে হবে।ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপ ব্যাবহার করলেও কোন প্রক্সি ব্যবহার করে আপনি আপনার আসল অবস্থান গোপন রাখতে পারেন।
২। ফেসবুক ব্যবহার করার সময় অন্যকোন সাইট ব্রাউজ করা থেকে বিরত থাকুন।
যদিও ফেসবুক বলছে, মানুষের তথ্যের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার নিশ্চয়তা দেওয়াই মূল কাজ।কিন্তু ফেসবুক যা করছে তাতে আপনার, আমার, আমাদের সকলের প্রত্যহিক ওয়েব প্রেজেন্স এর সব তথ্য ডাকাতি করছে।প্রিয় পাঠক, না বলে কিছু নিলে বলতাম চুরি, কিন্তু বলে কয়ে সব কিছু নিয়ে গেলে তাকে ডাকাতিই বলা উচিত তাই না?
প্রিয় পাঠক, আপনার নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব আপনার নিজের।আমি বলছি না ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করে দিন, শুধু সাবধানে ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করছি।
Comments
Post a Comment