MBps এবং Mbps এর মধ্যে পার্থক্য এবং ওয়াই-ফাই এর স্পিড কম পাওয়ার কারণ

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, যেটাকে আমরা ওয়াইফাই হিসেবে চিনে থাকি। যেখানে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কোন লিমিট নেই এবং এখানে আনলিমিটেড ভাবে মোবাইল অপারেটর এর চাইতে অনেক দ্রুতগতির ইন্টারনেট স্পিড পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আমরা যদি কোন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও থাকি সে ক্ষেত্রেও সেখানেও শহর অঞ্চলের মতো একই স্পিড পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে আমাদের মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে নেওয়া ইন্টারনেট এর মত ভোগান্তি পোহাতে হয় না। যেখানে আমরা পাই অনেক দ্রুত গতির ইন্টারনেট। তবে আমাদের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, আর সেটি হচ্ছে নির্ধারিত স্পিড না পাওয়া। আমরা যখন ওয়াইফাই নেই তখন আমাদের বলা থাকে যে, এটি 20 এমবিপিএস কিংবা 50 এমবিপিএস এর ইন্টারনেট লাইন। অর্থাৎ, আপনি যে ইন্টারনেট নিয়েছেন সেটির স্পিড 20 এমবিপিএস। এভাবে করে আপনি হয়তোবা 5mbps কিংবা 10mbps ইন্টারনেট লাইন নিয়ে থাকবেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় যে, আপনি আর সেই স্পিড পান না। বন্ধুরা আজকের এই আলোচনার এর মাধ্যমে আমি আমাদেরকে এই বিষয়টিকেই বলার চেষ্টা করব যে, ৫ এমবিপিএস কিংবা ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট লাইন নেওয়ার পরও কেন আপনি এর ফুল স্পিড পান না। আপনি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেবার পর ফুল স্পিড না পাবার কারণ জানার জন্য আপনাকে প্রথমে MBps এবং Mbps সম্পর্কে জানতে হবে। আর তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, কেন আপনি আপনার ইন্টারনেট লাইনে ফুল স্পিড পান না। বন্ধুরা আজকের এই আলোচনায় আমি খুবই সাধারন একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের কে বোঝানোর চেষ্টা করব। আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তোবা ইতিমধ্যে এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনে থাকবেন। তবুও আপনারা যারা এখনো জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আলোচনা টি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তো বন্ধুরা চলুন কথা না বাড়িয়ে এবার মূল আলোচনায় চলে যাওয়া যাক। আর এজন্য অবশ্যই সম্পূর্ণ লেখাটি মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকুন। অনেকেই হয়তোবা এই দুইটি জিনিস কে একই ভেবে থাকে। কিন্তু এই দুইটি জিনিস মোটেই একই বিষয় নয়। MBps এর অর্থ হচ্ছে, Mega Byte per second; এবং Mbps এর অর্থ হচ্ছে, Mega bit per second। আসলে এদের মধ্যে কোথায় কোথায় পার্থক্য রয়েছে এবং এই দুইটি বিষয়কে কোন কোন জায়গায় ব্যবহার করা হয় এগুলোকে আমাদের জানতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের নিয়ে থাকেন তবে এই জিনিসটি আপনাকে অবশ্যই খুব ভালোভাবে জানা থাকতে হবে। আপনার মধ্যে যদি এই দুটি বিষয় সম্পর্কে না জানা থাকে তবে লেখা টি মনোযোগ দিয়ে দেখুন। MBps এবং Mbps সম্পর্কে আপনাদের যা যা জানা দরকার সেগুলো খুবই সাধারণ ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি এই লেখাটিতে। কম্পিউটারের ভাষাতে ছোট হাতের b দিয়ে bit-কে বোঝানো হয়, অন্যদিকে বড় হাতের B দিয়ে Byte-কে বোঝানো হয়। আর এই দুটিই হচ্ছে ডেটা পরিমাপের একটি একক। চালকে যেমন কেজিতে মাপা হয়, ঠিক তেমনি ভাবে ডেটাকে মাপার জন্য বিট এবং বাইট ব্যবহার করা হয়। যেখানে 8 bit সমান 1 Byte ডেটা। ঠিক যেমনি ভাবে 40 কেজিতে এক মণ হয়, একইভাবে 8 bit সমান 1 Byte ডেটা হয়। কিংবা এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ১ বাইট সমান ৮ বিট। এখানে 1MBps এর মানে হচ্ছে, 1, 000, 000 Byte per second। কেননা এখানে MBps এ জায়গায় B-টি বড় হাতের রয়েছে; আর এটি এখানে Byte-কে বুঝাচ্ছে। আর অন্যদিকে 1mbps এর অর্থ হচ্ছে 1, 000, 000 bit per second; কেননা এখানে b টি ছোট হাতের রয়েছে। যার মানে এটি bit কে তুলে ধরছে। এখন যদি আমি আপনাদেরকে প্রশ্ন করি যে, 1MB এবং 1Mb এর মধ্যে কোনটি বড়? এখানে এটি বলা খুবই সোজা যে এখানে 1MB-টিই বড়; কেননা এখানে 1 Mega Byte রয়েছে। অন্যদিকে 1Mb এর কথা বললে এখানে 1 Mega Bit রয়েছে। আর আমি উপরে আগেই বললাম যে, 1 Byte এর অর্থ 8 Bit। যেখানে 8 Bit ডেটা এবং 1 Byte একই, অর্থাৎ এরা দুটিই সাইজে এক হবে। এখানে আমরা এটা পরিস্কার করলাম যে, 1 Mega Byte সমান 1 Mega Bit। আর এটি নিজেই অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায় যে, কোনটি মেগাবিট এবং কোনটি মেগাবাইট। আর অনেকে জানলেও এর সঠিক পার্থক্যটি জানেনা। আর যেখানেই আপনি এই B-টি বড় হাতের দেখবেন তখন সেটি বুঝে নিবেন মেগাবাইট এবং যেখানে b-টি এরকম ছোট হাতের থাকবে সেখানে বুঝতে হবে মেগাবিট। আপনার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেওয়ার ক্ষেত্রে মূলত এই জায়গাতেই সন্দেহ তৈরি হয়। সাধারণভাবে ইন্টারনেটের স্পিড মাপার ক্ষেত্রে মেগাবিট কে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে একটি যেকোন ফাইলের সাইজ হিসাব করার জন্য মেগাবাইটে ব্যবহার করা হয়। আর এখানেই মূলত সন্দেহের সৃষ্টি হয় যে, ইন্টারনেট মাপার ক্ষেত্রে আপনি ঠিকই সেখানে ফুল স্পিড দেখতে পান, কিন্তু কোন ফাইল ডাউনলোড করার সময় আর সেরকম স্পিড পান না। আপনি যখন ইন্টারনেট স্পিড কোন ওয়েবসাইট থেকে মেপেছিলেন, তখন সেখানে 'মেগাবিট পার সেকেন্ডে' সেটি হয়েছিল। কিন্তু এবার যখন আপনি ইন্টারনেট থেকে কোন ফাইল ডাউনলোড করবেন সেটি অবশ্যই হবে মেগাবাইটে। কেননা আমরা যেসব ফাইল গুলো আমাদের মোবাইলে কম্পিউটারে কিংবা যেকোন যায়গায় স্টোর করে রাখি তখন সেখানে সেটি মেগাবাইটে থাকে। যে কারনেই আমরা ইন্টারনেট স্পিড মাপার ক্ষেত্রে দেখতে পাই ধরুন 16 এমবিবিএস, কিন্তু কোন ফাইল ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে দেখি সেটির স্পিড গিয়ে দাঁড়িয়েছে 2 এমবিপিএসে। এখানে আপনাকে যে ইন্টারনেট লাইনটি দেওয়া হয়েছে সেটির স্পিড ঠিকই 16 এমবিপিএস, কিন্তু এখানে আপনাকে দেওয়া হয়েছে 16 মেগাবিট পার সেকেন্ড এর লাইন। যেখানে 8 বিট সমান এক বাইট এবং 8 মেগাবিট = 1 মেগাবাইট। এভাবে করে 16 মেগাবিট = 2 মেগাবাইট। এবার নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে কেন আপনি আপনার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে কম স্পীড পান। অফিসের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেওয়ার ক্ষেত্রে সেখান থেকে জেনে নেন যে, আপনাকে মেগাবিটে নাকি মেগাবাইটে লাইন দেওয়া হয়েছে তবে আপনি সেটির সমাধান তখনই পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে ইন্টারনেট লাইন নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনি যদি 8 Mbps একটি লাইন নেন তবে এক্ষেত্রে আপনি ফাইল ডাউনলোড করার সময় সর্বোচ্চ স্পিড পাবেন 1MBps করে। কেননা আমরা যেসব ফাইল ডাউনলোড করি সেগুলো সব সময় মেগাবাইটে আমাদের মেমোরিতে জমা থাকে। 16mbps এর ইন্টারনেট লাইনে যেমন আমরা 2MBps স্পিড পাবো, ঠিক তেমনিভাবে যদি আমাদেরকে 40mbps এর লাইন দেওয়া হয় তবে আমারা এখানে পাবো মাত্র 5MBps স্পিড। এভাবে করে আপনি যদি 10mbps এর লাইন নেন তবে আপনি ফাইল ডাউনলোডে স্পিড পাবেন 1.25 MBps। আর এজন্য ইন্টারনেট নেবার ক্ষেত্রে আপনাকে MB এবং Mb এর দিকে নজর দিতে হবে। যেখানে b এর অর্থ bit এবং এই B এর অর্থ Byte। আর আমরা যদি মেগাবিটে লাইনটি নিয়ে থাকি, তবে আমাদেরকে সেই স্পিড কে ৮ দ্বারা ভাগ করতে হবে; আর তাহলেই আমরা আমাদের সঠিক ডাউনলোড স্পিড পেয়ে যাবো। বন্ধুরা, আমি আশা করছি যে আজকের আলোচনার মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেবার ক্ষেত্রে আমরা কেন নির্ধারিত স্পিড এর চাইতে কম স্পিড পেয়ে থাকি। এছাড়া আপনারা এই লেখাটির মাধ্যমে আপনারা এটিও বুঝতে পেরেছেন যে মেগাবাইট এর মধ্যে কি কি পার্থক্য রয়েছে এবং এগুলোকে কোন সময় ব্যবহার করা হয়। আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তোবা এই বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন। যদি আপনারা এই বিষয়টি আগে থেকে জেনে থাকেন তবে ভালো কথা। তবে এখনো যারা এই বিষয়টি নিয়ে জানেন না, তাদের জন্য এই আলোচনা টি করার ছিল।

Comments

Popular posts from this blog

বৈদ্যুতিক ফ্যান আস্তে চালালে বিদ্যুৎ খরচ কম আর জোরে চালালে কি বেশি খরচ হয়?

Custom Rom(কাষ্টম রম) কি? কিভাবে নিজেই এন্ড্রোয়েড এ কাস্টম রম ইন্সটল করবেন।।।

Best Custom ROM for Xiaomi Redmi Note 8