বন্ধ থাকলে সিমের মালিকানা কত দিন?
২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত আপনার কোনো সিম যদি টানা ১৫ মাস বন্ধ থাকে, তাহলে সেটি আগামী এক মাসের মধ্যে চালু করে নিন। কারণ, যে সিমটি এত দিন ব্যবহার না করে ফেলে রেখেছেন, সেটি আগামী এক মাসের মধ্যে চালু না করলে এর মালিকানা আর আপনার কাছে থাকবে না। সিমের মালিকানা রাখার সময়সীমা বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গতকাল বৃহস্পতিবার এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিগগির অপারেটরদের তা জানিয়ে দেবে বিটিআরসি।
বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন নিয়ম অনুযায়ী টানা ১৫ মাস বা ৪৫০ দিন একটি সিম ব্যবহার না করা হলে সেটির মালিকানা ধরে রাখতে বাড়তি ৩০ দিন সময় পাবেন গ্রাহক। অর্থাৎ ৪৮০ দিনের মধ্যে বন্ধ থাকা সিমটি চালু না করা হলে সেটির মালিকানা আর গ্রাহকের থাকবে না। এ সময়ের মধ্যে সিম সচল না করা হলে সংশ্লিষ্ট মুঠোফোন অপারেটর সেটি নতুন করে আবার বিক্রি করতে পারবে।
বিটিআরসির মুখপাত্র ও সচিব সরওয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, একটি সিম টানা ৪৫০ দিন বন্ধ থাকলে সেটি চালু করতে মুঠোফোন অপারেটররা গ্রাহককে একটি নোটিশ বা সময়সীমা বেঁধে দেয়। সেই সময়সীমার মেয়াদ ৯০ দিন ছিল, সেটি কমিয়ে এখন ৩০ দিন করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সিমটি সচল না করা হলে সেটির মালিকানা আর গ্রাহকের থাকবে না।
বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে বড় মুঠোফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের ‘০১৭’ নম্বর সিরিজের নম্বর সংকট কাটাতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ০১৭ সিরিজের তিন কোটি পুরোনো সংযোগ নতুন করে বিক্রি করতে পারবে গ্রামীণফোন। নতুন সংযোগ বিক্রি করা নিয়ে অপারেটরটি এখন যে সংকটে আছে, এ সিদ্ধান্তে সেই সমস্যা থাকবে না বলে বিটিআরসি মনে করছে।
জাতীয় নম্বর পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশে মুঠোফোন নম্বর শুরু হয় ‘০১’ দিয়ে। এর সঙ্গে আরও ৯টি অঙ্ক যোগ করে ১১ অঙ্কবিশিষ্ট একটি মুঠোফোন নম্বর তৈরি হয়। প্রতি অপারেটর তাদের জন্য বরাদ্দ নম্বর কোড দিয়ে ১১ অঙ্কের ১০ কোটি নম্বর তৈরি করতে পারে। এর মধ্যে সিটিসেল ০১১, টেলিটক ০১৫, গ্রামীণফোন ০১৭, রবি ০১৮ ও ০১৬ এবং বাংলালিংক ০১৯ নম্বর সিরিজ ব্যবহার করে।
গ্রামীণফোনের ০১৭ সিরিজের বাইরে বর্তমানে ০১০, ০১২, ০১৩ ও ০১৪ নম্বর সিরিজ অব্যবহৃত আছে। গত বছরের আগস্টে গ্রামীণফোনকে ০১৩ নম্বর সিরিজ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিটিআরসি।
গ্রামীণফোন বলছে, তাদের বর্তমান ০১৭ সিরিজের ১০ কোটি নম্বর আগামী মে মাসে শেষ হয়ে যাবে। এরপর নতুন সিম প্রতিষ্ঠানটি বাজারে বিক্রি করতে পারবে না। ২৪ এপ্রিল ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দেয় গ্রামীণফোন। চিঠিটি আমলে নিয়ে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন তারানা হালিম।
বিটিআরসির হিসাবে, বর্তমানে গ্রামীণফোনের সচল সিমের সংখ্যা ৬ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বাকি ৪ কোটি সিমের ৩ কোটিই অব্যবহৃত অবস্থায় গ্রাহকের হাতে আছে। এ ছাড়া অবৈধ ভিওআইপি ও সঠিকভাবে নিবন্ধিত না হওয়ায় বন্ধ আছে আরও ৬৫ লাখ সিম। আর বিশেষ কারণে সংরক্ষিত আছে আরও ৩৫ লাখ সিম। মালিকানার শর্ত শিথিল করায় ৩ কোটি সিম আবার বিক্রি করতে পারবে গ্রামীণফোন।
Comments
Post a Comment